কবুতরের টাল রোগের চিকিৎসা - আমরা অনেকেই বিভিন্ন কারনে কবুতর পালন করে থাকি কেউ লাভের কারনে বা কেউ শখের কারনে। যেই যেই কারনে কবুতর পালন করুক না কেন মাজের মধ্যে কবুতরের বিভিন্ন সমস্যা হয়ে থাকে। বিভিন্ন রকমের রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। তারমধ্যে বেশির ভাগই কবুতর টাল রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। কিন্তু আমরা অনেকেই চিন্তাই পড়ে যায় বা ভয় পেয়ে যায় কবুতরের এই রোগ হলে। তবে চিন্তার কোনো কারণ নেই আমি আজকে আপনাদের সমস্ত উপায় জানিয়ে দিব যেমন; কবুতরের ঘাড়বাঁকা বা টাল রোগের কারণ, কবুতরের ঘাড়বাঁকা রোগের লক্ষণ, কবুতরের টাল রোগের প্রতিরোধ, ইত্যাদি সম্পর্কে।

কবুতরের টাল রোগের চিকিৎসা
ভিটামিন বি এর অভাবে কবুতরের টাল রোগটি হয়ে থাকে তবে টেনশনের কোনো কারন নেই আপনি ঠিকমতো কবুতরের যত্ন নিলে খুব তাড়াতাড়ি এই রোগ টিক হয়ে যাবে। কবুতরের শরীরে ভিটামিন বি জমা থাকে না বলে কবুতরের টাল বা ঘাড়বাঁকা রোগ হয়ে থাকে। তবে এই রোগটি একদিনে হয় না আস্তে আস্তে এই রোগটি হয়ে থাকে।
তবে চিন্তার কোনো কারণ নেই কবুতরের এই রোগের লক্ষণ দেখা দিলেই প্রথম থেকে ভালো মতো চিকিৎসা করলে খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাবে এই রোগ থেকে। এখন বলতে পারেন কোন ধরনের চিকিৎসা করাব। তার জন্যে নিচের আর্টিক্যাল ভালো ভাবে পড়ুন আপনার উত্তর জানতে পারবেন।
কবুতরের টাল রোগের লক্ষণ দেখা দিলে AB - 1 এবং রেনামিসিন ওষধ খাবাতে পারেন। তবে AB - 1 এই ওষধ টি মানুষ খেয়ে থাকে। তাই আপনি রেনামিসিন ওষধ সাথে একসাথে AB - 1 ওষধ খাবান তাহলে খুব তারাতারি কবুতর এই রোগ থেকে রক্ষা পাবে। রেনামিসিন পশু পাখির জন্যে। এইবার প্রশ্ন করতে পারেন কখন কিভাবে এই ওষধ গুলো খাওয়াবো।
কবুতর ভরা পেটে অবস্থায় রাতের বেলায় AB - 1 এই ওষধ এর একটি বরি সম্পূর্ন এবং সাথে রেনামিসিন এই ওষধ এর একটি বরি ৩ ভাগের ১ ভাগ কবুতরকে খাওয়াবেন।
এছাড়াও আপনি নিয়মিত কবুতরকে নিয়মিত গোল মরিচ খাওয়াবেন ( ৪-৫ ) টা। সেইক্ষেত্রে খালি পেটে খাওয়াতে হবে এই মরিচ গুলো। আর নিয়মিত কবুতর কে রোধে রাখার চেষ্টা করবেন।
আরো পড়ুন; কিশোরগঞ্জ কিসের জন্য বিখ্যাত
কবুতরের ঘাড়বাঁকা বা টাল রোগের কারণ
এখন আমি আলোচনা করব কেন কবুতরের টাল রোগ হয়ে থাকে । কবুতরে কবুতরের টাল রোগের কারণ হলো টিক মতো ময়লা - আবর্জনা পরিষ্কার না করা এবং কবুতরের যত্ন না নেওয়া। কয়েকটি কারনে কবুতরের টাল রোগের কারণ হয়ে থাকে। আমি নিচে আলোচনা করেছি কবুতরের টাল রোগের কারণ। তার আগে বলে রাখি এই ধরনের রোগ ১০-২০ দিন ছড়াতে পারে ।
কবুতরের খাবারের পাত্র পরিষ্কার না করা। কবুতর যখন তার খাবারের পাত্রে পায়খানা করে দিবে তখন এই পাত্র পরিষ্কার না করা হলে এই রোগ ছড়াতে পারে। কবুতরের টাল রোগের প্রধান কারন হলো এইটি।
এই রোগের আক্রান্ত কবুতর খামারে বা অন্য কবতুর সাথে রাখা হলে এই রোগ ছড়াবে।
এই রোগের সংক্রমিত মলের মাধ্যমে ছড়বে।
বাইরের পাখি খামারে অবাধ প্রবেশ করলে।
খামারের কবুতর বাইরের কবুতরের সংস্পর্শে গেলে এই রোগ ছড়াবে।
আরো পড়ুন; বাংলাদেশে খরগোশের দাম কত
কবুতরের টাল রোগের লক্ষণ
এখন আলোচনা করব কবুতরের টাল রোগের লক্ষণ সম্পর্কে। আপনি কিভাবে জানবেন কবুতরের টাল রোগ হয়েছে। তার জন্যে এই পোস্টটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন। কবুতরের টাল রোগের লক্ষণ নিচে দেওয়া আছে।
- বমি করবে অথবা বমি বমি ভাব করবে।
- খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দেয়।
- চুপ করে বসে থাকে।
- লোম ফুলিয়ে বসে থাকে।
- এক পা উচুঁ করে বসে থাকে।
- মুখ গুঁজে বসে থাকে।
- ঘাড় বেকে যাওয়া সম্ভবনা থাকে।
- মাথা কাপতে থাকে।
- দ্রুত ওজন কমে যাবে।
- কিছুটা শিথিল হয়ে যাবে।
- বুকের হাড় বেরিয়ে যাবে।
- পা ফুলে যাবে।
- একই জাগায় ঘুরতে থাকবে।
- উড়ার সময় পরে যাবে ।
- সবুজ পায়খানা হবে।
- সাদা পায়খানা হবে।
আপনি যখনই উপরের এইসব লক্ষণ দেখবেন তখনই মনে করবেন কবুতরের টাল রোগ হয়েছে। উপরের এইসব মূলত কবুতরের টাল রোগের লক্ষণ তাই এসব খেয়াল রাখবেন সবসময়।
আরো পড়ুন; খরগোশের বাচ্চা পালন পদ্ধতি
কবুতরের টাল রোগের প্রতিরোধ
- আক্রান্ত কবুতরকে আলাদা করতে হবে।
- রোদে রাখতে হবে।
- কবুতর পানির পাত্র ময়লা - আবর্জনা পরিষ্কার করতে হবে ( পায়খানা )।
- বি কমপ্লেক্স প্রয়োগ করতে হবে ( নিয়মিত )।
- দিনে ২-৩ বার ঘার হালকা টেনে দিতে হবে।
- পানি খাওয়াতে হবে।
- ভিটামিন বি খাওয়াতে হবে। অন্যান্য ভিটামিন খাওয়ানো যাবে না অসুখ অবস্থায়।
এছাড়াও Hamico ph কোর্স করতে হবে নিয়মিত। আপনি চাইলে আরো অনেক কিছু করতে পারেন তার মধ্যে আমি কিছু টিপস শেয়ার করব সেইগুলো হলো ; কবুতরের যেই দিকে ঘাড় বাঁকা হয়েছে তার বিপরীত দিকে ৫-৭ সেকেন্ড হাত দিয়ে ধরে রাখবেন প্রতিদিন ২ - ৩ বার এই কাজ করবেন তাহলে দেখবেন খুব তাড়াতাড়ি টিক হয়ে যাবে।
কবুতরের টাল রোগের চিকিৎসা এই পোস্টের কোনো ভুল তথ্য থাকলে নিচে কমেন্ট করে জানান।
বিষয়
Pet